রহমত নিউজ ডেস্ক 29 August, 2023 09:51 AM
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমীর আল্লামা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও মহাসচিব মাওলানা শায়খ সাজিদুর রহমান বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বাংলা বিভাগের এ নোটিশটি ছিলো ধর্মীয় স্বাধীনতার চূড়ান্ত পরিপন্থী। নোটিশটির বিরুদ্ধে ঢাবির ধর্মপ্রাণ শিক্ষার্থীরা সংবাদ সম্মেলন, মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেন। চূড়ান্ত মীমাংসার জন্য তারা গত ১৯ ফেব্রুয়ারি '২৩ তারিখে হাইকোর্টে রিট করেন। রিটের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট উক্ত নোটিশটি ছয় মাসের জন্য স্থগিত রাখার নির্দেশ প্রদান করেন। চেম্বার জজ আদালতও এ স্থগিতাদেশ বহাল রাখেন। পরবর্তীতে আপিল বেঞ্চ সেই স্থগিতাদেশ বাতিল করে দুই মাসের মধ্যে রিটটি নিষ্পত্তি করার আদেশ দেন। বর্তমানে রিট নিষ্পত্তির শুনানি চলমান রয়েছে।
সোমবার (২৮ আগস্ট) হেফাজতের প্রচার সম্পাদক মুফতী কিফায়াতুল্লাহ আযহারী স্বাক্ষরিত সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় এসব কথা বলেন। এর আগে, গত ২০২২ সনের ১১ ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের এক নোটিশে বিভাগের সকল প্রেজেন্টেশন, টিউটোরিয়াল, মিডটার্ম পরীক্ষা, চূড়ান্ত পরীক্ষা এবং ভাইভাতে কানসহ মুখমণ্ডল দৃশ্যমান রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়। না হলে তাদের বিরুদ্ধে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে উল্লেখ করা হয়।
গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে নেতৃদ্বয় বলেন, দুঃখজনক ব্যাপার হলো এই স্থগিতাদেশ বাতিল করাকে পুঁজি করে ঢাবির সর্বেশেষ পরীক্ষাগুলোতে বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টে হিজাব পরিহিতা শিক্ষার্থীদের সাথে জঘন্য আচরণ করা হয়েছে। বাংলা বিভাগের মেয়েদেরকে উক্ত নোটিশ মানতে বাধ্য করা হয়েছে। আই.ই.আর এর ফাইনাল পরীক্ষার ভাইভাতে অনেককে পুরো সময় মুখ খোলা রাখতে বাধ্য করা হয়েছে। কয়েকজন মুখ খুলতে রাজি না হওয়ায় হেনস্থার শিকার হয়েছে, কারও কারও ভাইভা পরীক্ষাই গ্রহণ করা হয়নি। অন্যান্য ডিপার্টমেন্টের ব্যাপারেও অনুরূপ অভিযোগ পাওয়া গেছে। আমরা আশা করছি হিজাব নিকাবের মতো স্পর্শকাতর বিষয়ে নব্বই ভাগ মুসলমানের দেশে কুরআন হাদীস এবং ধর্মীয় মূল্যবোধ অক্ষুণ্ন রেখেই কোর্ট চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত প্রদান করবেন। এর ব্যত্যয় ঘটলে শিক্ষাঙ্গন থেকে মুসলিম নারীরা ঝরে পড়ার সর্বোচ্চ আশংকা রয়েছে। এতে করে দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিও সম্পূর্ণ বিনষ্ট হয়ে পড়বে বলে আমরা আশংকা করছি।
নেতৃদ্বয় দাবি করে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের পরিচয় শনাক্তকরণে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করতে হবে। অন্যথায় নারী কর্মচারী কিংবা নারী শিক্ষিকার মাধ্যমে আলাদা রুমে পরিচয় শনাক্ত করার ব্যবস্থা চালু করতে হবে। দ্রুততম সময়ে সকল অনুষদের সকল বিভাগে হিজাব-নিকাব পরিধানকারী শিক্ষার্থীদেরকে হেনস্থা করা বন্ধে নোটিশ প্রদান করতে হবে। বিভিন্ন সময়ে ক্লাসরুমে, ভাইবা বোর্ডে অথবা পরীক্ষার হলে নিকাব খুলতে বাধ্য করার মতো ঘটনাগুলো তদন্তপূর্বক বিচারের আওতায় আনতে হবে। হিজাব বা নিকাব পরিধান সংক্রান্ত ঘটনায় ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের পুনরায় ফিরিয়ে এনে ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করতে হবে। অন্যথায় নব্বই ভাগের মুসলমানের দেশে ধর্মীয় মূল্যবোধ বিরোধী কোন সিদ্ধান্ত তাওহীদী জনতা মেনে নিবে না।